আমার বাংলা ওয়েব, নন্দীগ্রাম,২৫ মার্চ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে নন্দীগ্রাম আন্দোলন শুরু করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ২০২১ সালে প্রথম দফার নির্বাচনে সারা বাংলার চোখ থাকবে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী লড়াইয়ের দিকে। কারণ নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে মূল প্রতিপক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারী।
২১০ নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রটি মূলত দুটি ব্লক নিয়ে গঠিত। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক এবং নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লক। নন্দীগ্রামে দুটি ব্লকের ছবি কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাব বেশি। নন্দীগ্রাম 2 নম্বর ব্লকে শুভেন্দু অধিকারী হাত ধরে বিজেপি কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী ভোট পেয়েছিলেন ১৩৪৬২৩ টি। সিপিএম প্রার্থী আব্দুল কবির শেখ ভোট পেয়েছিলেন ৫৩৩৯৩ টি ও বিজেপি প্রার্থী বিজন কুমার দাস ১০৭১৩ টি ভোট পেয়েছিলেন। ৮১২৩০ ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জয়লাভ করেন।তবে মূল লড়াই হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দিবেন্দ্যু অধিকারী পায় ১৩০৬৫৯ টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্থ শংকর নস্কর পায় ৬২২৬৮ টি ভোট। সেই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ৬৮৩৯১ ভোটে জয়লাভ করেন। তবে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় বিজেপির ভোট বাড়ে ৫১৫৫৫ টি ভোট। বিজেপি নেতাদের মতে, সেইসময় বিজেপির কোন সংগঠন না থাকলেও মানুষ তৃণমূলের বিপক্ষে ভোট দিতে শুরু করেছিল। বিজেপির ভোট ব্যাংক বেড়ে যাওয়ায় সেটা স্পষ্ট হয়েছে। আর সেই কারণেই তারা চলতি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীর জেতার ব্যাপারে আশাবাদী।
রাজনৈতিক মহলের মতে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে লড়াইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের ভোট। নন্দীগ্রামে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নেতা আব্বাস সিদ্দিকী প্রার্থী দিতে পারে বলে প্রথমে একটা জল্পনা শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে ওই আসনে টিকিট দেওয়া হয় সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। ওই আসনে যদি আব্বাস সিদ্দিকী প্রার্থী দিত তাহলে সংখ্যালঘু ভোট কাটাকাটির ফলে বাড়তি সুবিধা পেতে পারতো শুভেন্দু অধিকারী এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু সংযুক্ত মোর্চার শরিক সিপিএমের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছে। প্রচারে বেরিয়ে বাম প্রার্থী মানুষের কাছে জানতে পেরেছেন পঞ্চায়েতে ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ এখনো সাধারন মানুষদের রয়ে গেছে। আর রতনপুর থেকে টাকাপুরা, রেয়াপাড়া থেকে গোপালপুর কিংবা ভেকুটিয়া থেকে বাড়কান্ড পসরা সব জায়গাতেই আট থেকে আশির মন জয় করেছেন মীনাক্ষী।
ফলে সিপিএম প্রার্থী যদি জোটের প্রার্থী যদি পনেরো থেকে কুড়ি শতাংশ ভোট কেটে দিতে পারে তাহলে বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণেই দেখা যাচ্ছে বিজেপি তাদের প্রচারে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি বামেদের আক্রমণ করতে ছাড়ছে না। মীনাক্ষীও দাবি করেছে কী ঘটবে ২ মে সারা বাংলা দেখবে।
রেয়াপাড়ায় ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ এর সঙ্গে টক্কর শুরু হয়েছে মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীর। তবে শেষ হাসি কে হাসবে সেজন্য তাকিয়ে থাকতেই হবে ২ রা মের দিকে।