আমার বাংলা, 7 জুলাই: সকাল থেকে রাত কিংবা রাত থেকে সকাল যে কোন মুহুর্তেই ঘটতে পারে কোন না কোন ঘটনা। আর ঘটনা ঘটা মানেই স্পটে হাজির। কিংবা সাধারণ মানুষের জীবনের কথা শুনতে এখানে ওখানে ঢুঁ মারা এইভাবেই দিন কেটে যায় সাংবাদিকদের। ফলে নিজেদের মধ্যে আড্ডা কিংবা সময় কাটানো সেইভাবে আর হয়ে ওঠে না। ফলে যারা নিজেদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হলেও আড্ডা দেওয়া আর হয়ে ওঠে না। অনেক সময় কারো কারো পরিবারে কোন না কোন সমস্যা দেখা দেয় সেই খবরও হয়তো কেউ কেউ পায় না। সেই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই 2007 সালে বর্ধমানে গড়ে ওঠে বেঙ্গল প্রেস ক্লাব। সেই পথ চলা শুরু।
রবিবার ছিল বেঙ্গল প্রেস ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভা। ফলে কাজের ফাঁকে সময় বের করে একে একে সকলেই হাজির সেই সভায়। ক্লাবের সম্পাদক সৌগত সাঁই ততক্ষণে সমস্ত কিছু আয়োজন সেরে ফেলেছে। হাজির হয় একে একে সংগঠনের সদস্যরা। সাংবাদিক পার্থ চৌধুরী, বিজয়প্রকাশ দাস, ঋষিগোপাল মন্ডল, অরূপ লাহা, সদন সিনহা, বিধান চন্দ্র, জয়প্রকাশ দাস,কাজল মির্জা, মনোতোষ পোদ্দার, অসিত রাউত কিংবা সুজাতা মেহেরা তাদের অভিজ্ঞতার গল্পের ঝুলি নিয়ে আড্ডায় মেতে ওঠে। এরই ফাঁকে দুই গোপাল অর্থাৎ গোপাল মুখার্জি আর গোপাল সোনকারও আড্ডায় বুঁদ হয়ে গেছে।আমরা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘লালু’ গল্পে পড়েছিলাম গোপাল খুড়োর কথা আর বেঙ্গল প্রেস ক্লাবের আছে গোপাল বুড়ো। শুধু কি বুড়ো গোপাল, আছে আইবুড়ো গোপালও। তাকে অবশ্য এদিন আইবুড়ো ভাতের আগে খাওয়ানো হয় আইবুড়ো কচুরি মিষ্টি। কিন্তু কচুরি মিষ্টি আলুরদম খাওয়ার পরেও 20 ডিগ্রির ঠান্ডা ঘরে সে কেন ঘামতে শুরু করলো সেটা সেই জানে! তবে বেঙ্গল প্রেস ক্লাবে আছে আড়াই জন গোপাল। আড়াই জন বলা হচ্ছে কারণ আরো একজন ঋষি গোপাল মন্ডল।তিনি হাফ গোপাল! যার লেখার স্বাদ রবিবার হলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঋষিবচন – এ পেয়ে থাকে। যতই গোপালের আড়াই চাল থাক এদিন কিস্তিমাত করে কিন্তু পার্থ চৌধুরী। বক্তা হিসেবে পার্থ চৌধুরীকে সকলের কাছেই পরিচিত। কিন্তু গায়ক পার্থ চৌধুরীকে দেখা গেল বেঙ্গল প্রেস ক্লাবের আড্ডায়।যে আড্ডায় যোগ দিয়ে আপ্লুত সমাজসেবী মহিন্দর সিং সালুজা, রাসবিহারী হালদার ও তারক সাহা।
ঘরের তাপমাত্রা সৌগত সাঁই নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও বাইরের তাপমাত্রা সে নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যায়। সেই ব্যালেন্স রাখার জন্য সে কোন কসুর করেনি। ফুরফুরে হাওয়ায় বসে একটু জিরিয়ে নেওয়ার যাবতীয় উপাদান সে হাজির করে। কিন্তু আবহাওয়া ছিল বড্ড গুমোট। সেই আশা অবশ্য পূর্ণ করে দেয় অভিজিৎ সাহা। আসলে অভিজিৎ বলতে বোঝায় উজ্জ্বল নক্ষত্র। সৌর দুপুরে কেন্দ্রীভূত 48 মিনিটের একটা সময়কাল। যা শুভ মুহুর্তকে নির্দেশ করে। তাই গুমোট আবহাওয়া কাটাতে অভিজিৎ সাহা যখন মিটিংয়ে যোগ দিতে এলো তাকে সঙ্গে বেঁধে নিয়ে এলো। শুরু হয় বৃষ্টি। সকলেই একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।
এদিন তারক সাহা বলেন, ‘ এরকম একটা সুন্দর পরিবেশে হাজির থাকতে পেরে আমি আপ্লুত। আগামী দিনে এই সংগঠনের ভালো কাজের সঙ্গী আবার হতে চাই।”
মহিন্দার সিং সালুজা বলেন,
‘এখানে একটা ভালো আড্ডার পরিবেশ। আগামী দিনে বেঙ্গল প্রেস ক্লাবের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।’
রাসবিহারী হালদার বলেন, ‘ বেঙ্গল প্রেস ক্লাবের সদস্যরা সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি মানুষের পাশে থেকে কাজ করে। সেই নমুনা নিজে দেখেছি। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন কাজে আমি নিজেও সামিল হয়েছি।সবাই যদি আমরা একসাথে কাজ করতে পারি তাহলে অনেক মানুষের উপকার হবে।’
ক্লাবের সভাপতি বিজয়প্রকাশ দাস ও সম্পাদক সৌগত সাঁই বলেন, ‘ এদিন আড্ডার পরিবেশে সকলে মিলিত হয়ে বার্ষিক সভার কাজ শেষ করি। আগামী দিনে বেঙ্গল প্রেস ক্লাব সাধারণ মানুষের জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করবে সেই সিদ্ধান্ত এদিন নেওয়া হয়। “