আমার বাংলা ওয়েব, ২৮ মার্চ :
দীর্ঘ প্রায় একটা বছর ধরে কার্জনগেট অনেক ঘটনার সাক্ষী। এমনিতেই সারাদিন ছোটো বড়ো গাড়ির ভোঁ ভাঁ চ্যাঁ চ্যোঁ শব্দে কান ঝালাপালা করে। শুধু গাড়ির আওয়াজ কেন রাজনৈতিক দলের মিটিং মিছিল, রাস্তা অবরোধ কত কী। কখনো আবার টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দিলে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া দিনে দুপুরে ঢেকে দেয় কার্জনগেটকে। কিন্তু সে ধীর স্থির শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে। মাঝে সে নীরব ভাবে সাক্ষী থেকেছে লকডাউনের। চারদিক ছিল শুনশান। দেখলে মনে হয় কোথাও যেন একটা মনের কষ্ট। আসলে দীর্ঘদিন ধরে কচিকাঁচা গুলিকে না দেখার মনোবেদনা।
তবে রবিবারের সকালটা কেমন যেন অন্যরকম।নিত্যদিনের মতো সকাল হতে না হতেই পায়রা গুলি ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে খাবারের খোঁজে উড়ে গেছে। ধীরে ধীরে সকালের আলো ফুটেছে।
এদিকে বর্ধমান ছন্দমের ছন্দে প্রাণের স্পর্শ পেয়েছে কার্জনগেট। প্রাপ্তি, জেনিফার, আরাধ্য, স্বস্তিকা, চন্দ্রমা, শ্রীপর্ণা, অণ্বেষা সৌমিতারা যখন অলকানন্দা হল থেকে রানীগঞ্জ বাজার, বিসি রোড হয়ে প্রভাতফেরি করতে করতে কার্জনগেট চত্বরে জড়ো হয় তখন প্রভাত সূর্যের আলতো আলো যেন কার্জনগেটের মুখে আলতো করে আবির রাঙিয়ে দিয়ে যায়। অনেক দিন পরে যেন একটা অন্য অনুভূতি।
একটা বছর ধরে একঘেঁয়ে দিন কাটছিল। কতদিন দেখা যায়নি কার্জনগেট চত্বরে শিশুদের নৃত্য। নৃত্য শিল্পী তথা বর্ধমান ছন্দমের অধ্যক্ষ মেহবুহ হাসানের পরিচালনায় ও উত্তম দত্ত, সমীর চ্যাটার্জী সহ ছন্দমের সদস্যদের সহযোগিতায় ওরে বকুল পারুল, বসন্ত এসে গেছে, একি লাবন্যে, বসন্তে বাতাসে সই, রাঙিয়ে দিয়ে দাও একের পর এক গানের নৃত্যের ছন্দে দুলে ওঠে দর্শকের হৃদয়। মেতে ওঠে কার্জনগেট চত্বর। লাল, নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা আবিরে রঙিন হয়ে ওঠে কার্জনগেট চত্বর।
বেলা বাড়তে থাকে। ফলে আবার দিন গোনা শুরু। আশায় থাকে কার্জনগেট। বাতাসে তখনো ভাসছে ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল লাগলো যে দোল…।