বিশেষ প্রতিবেদন, আমার বাংলা ওয়েব, বাঁকুড়া, ৩১ মার্চ :
দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে বাঁকুড়ার আটটি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হবে। এর মধ্যে আছে তালডাঙরা, বাঁকুড়া, বড়জোড়া, ওন্দা, বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর, ইন্দাস ও সোনামুখী বিধানসভা কেন্দ্র।
রাজনৈতিক মহলের মতে, দ্বিতীয় দফায় বাঁকুড়ার যে আটটা বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হবে লোকসভার নিরিখে আটটি কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। ফলে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সেই জমি ফিরে পেতে জনসভা ছাড়াও একের পর এক কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক কর্মসূচি, দুয়ারে সরকার তৃণমূল কংগ্রেসকে আশার আলো দেখিয়েছে।
বিশেষ করে দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। বাঁকুড়া জেলায় অন্যতম বড় সমস্যা হচ্ছে পানীয় জলের সমস্যা। নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই জলের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। কেন এই জলের সমস্যা রয়ে গেছে সেকথা তুলে ধরে এর জন্য দায়ী করেছেন রাজ্য সরকারকে। তিনি বলেন,
ন্যাশনাল ড্রিংকিং ওয়াটার প্রজেক্টে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল সেই টাকা ব্যয় করা হয়নি। সেই টাকা যদি রাজ্য সরকার সঠিকভাবে ব্যয় করত তাহলে বাঁকুড়া মানুষকে জল কষ্টে ভুগতে হতো না। বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই সমস্যা তারা দূর করবে। পানীয় জল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বাঁকুড়া মূলত কৃষি প্রধান এলাকা। সেই কারণে সেচ সেবিত এলাকায় এই কেন সেচের ব্যবস্থা করা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ধরেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাঁকুড়ার যে আটটা বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হচ্ছে ওই সমস্ত কেন্দ্রে দেখা গেছে একাধিক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। কিন্তু একটা বিষয় দুটি দলকেই ভাবাচ্ছে। সেটা হচ্ছে গোষ্ঠী কোন্দল। একদিকে যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল অন্যদিকে বিজেপি দলের মধ্যেও গোষ্ঠী কোন্দল বাড়তে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচারে আসার আগে পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস প্রচারে বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে ছিল এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী আসার পরে বাঁকুড়ায় সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। ফলে প্রধানমন্ত্রী আসার পরে বিজেপি নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে। সেইসঙ্গে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তী ইন্দাস বিভিন্ন এলাকায় রোড শো করেছেন। সেখানেও সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী আসার আগে পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের মধ্যে একটা আশার আলো ছিল হয়তো তারা সহজেই বাঁকুড়ার জমি পুনরুদ্ধার করতে পারবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পরবর্তীকালে মিঠুন চক্রবর্তীর রোড শোতে যেভাবে মানুষের ঢল নেমেছে তাতে কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে জমি উদ্ধার করার কাজ খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দ্বিতীয় দফায় বাঁকুড়ায় আট বিধানসভা কেন্দ্র যে হাই ভোল্টেজ হতে যাচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই।